আল্লাহর ক্ষমার মহাসাগর: ফিরে আসার এখনই সময়

ক্ষমা প্রার্থনারত ব্যক্তি

স্তেগফার, অর্থাৎ আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা, মুমিনের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। মানুষ হিসেবে আমরা ভুল করি, গুনাহে লিপ্ত হই। কিন্তু আল্লাহর দয়ার দরজা কখনো বন্ধ হয় না। যখনই কোনো বান্দা তার ভুলের জন্য অনুতপ্ত হয়ে ফিরে আসে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করার জন্য প্রস্তুত থাকেন।

وَٱسْتَغْفِرِ ٱللَّهَ ۖ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُورًا رَّحِيمًا

"আর তুমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।"

— সূরা আন-নিসা, আয়াত ১০৬

আল্লাহর ক্ষমার বিশালতা

গুনাহ যত বড়ই হোক না কেন, আল্লাহর রহমত তার চেয়েও অনেক বেশি প্রশস্ত। হতাশ হওয়া মুমিনের কাজ নয়। নবী (ﷺ) আমাদের শিখিয়েছেন, আন্তরিক তওবা পাহাড় পরিমাণ গুনাহকেও মুছে দিতে পারে।

"তোমরা যদি পাপাচার করতে, এমনকি তোমাদের পাপ আকাশের সীমা পর্যন্ত পৌঁছে যেতো, অতঃপর তোমরা তওবা করতে, তাহলে আল্লাহ অবশ্যই তোমাদের তওবা কবুল করবেন।"

— সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৪২৪৮

বারবার গুনাহ ও আল্লাহর ক্ষমা

শয়তান প্রায়ই আমাদের মনে এই ওয়াসওয়াসা দেয় যে, "তুমি তো একই ভুল বারবার করছ, আল্লাহ কি তোমাকে ক্ষমা করবেন?" এই নিরাশার ফাঁদে পা না দিয়ে আল্লাহর রহমতের প্রতি বিশ্বাস রাখা অপরিহার্য। নিচের হাদিসটি এই বিষয়ে আমাদের জন্য এক বিরাট সুসংবাদ।

নবী (ﷺ) বলেন, এক বান্দা গুনাহ্ করে বলল, "হে আমার রব! আমি তো গুনাহ্ করে ফেলেছি, আমার গুনাহ্ ক্ষমা করে দাও।" তার প্রতিপালক বললেন, "আমার বান্দা জেনেছে যে, তার একজন রব আছেন, যিনি গুনাহ্ ক্ষমা করেন এবং এর কারণে শাস্তিও দেন। আমি আমার বান্দাকে মাফ করে দিলাম।"

এরপর সে আবার গুনাহ্তে জড়িয়ে গেল এবং আবার বলল, "হে আমার প্রতিপালক! আমি তো আবার গুনাহ্ করে বসেছি, আমার এ গুনাহ্ তুমি মাফ করে দাও।" তখন আল্লাহ্ পুনরায় বললেন, "...আমি আমার এ বান্দাকে মাফ করে দিলাম।"

এই ঘটনা তৃতীয়বার ঘটার পরও আল্লাহ বললেন, "আমি আমার এ বান্দাকে মাফ করে দিলাম..."

— সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৭৫০৭
মূল শিক্ষা
  • গুনাহ হয়ে গেলে হতাশ না হয়েทันที আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।
  • আল্লাহর ক্ষমার দরজা সর্বদা খোলা, এমনকি যদি একই ভুল বারবারও হয়।
  • আন্তরিক অনুশোচনা ও তওবা হলো ক্ষমা লাভের পূর্বশর্ত।
  • আল্লাহর রহমতের প্রতি সুধারণা রাখা ঈমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।
Author

লেখক: ফয়সাল সাকিব

ইসলামিক গবেষক