.jpg)
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, যখন একজন দ্বীনদার ব্যক্তির রূহ কবজ করা হয়, তখন এক অভূতপূর্ব ও সম্মানজনক যাত্রা শুরু হয়। প্রতিটি ধাপে তার জন্য অপেক্ষা করে আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ অভ্যর্থনা ও পুরস্কার।
মৃত্যু থেকে কবর পর্যন্ত যাত্রা
-
আত্মার বিদায় ও শরীরের কৃতজ্ঞতা
রূহ শরীরকে বলে, “আল্লাহ তোমাকে উত্তম পুরস্কার দিন। তুমি আমাকে নিয়ে ইবাদতে ব্যস্ত থাকতে।” শরীরও রূহকে অনুরূপ কৃতজ্ঞতা জানায়।
-
আসমান ও যমিনের কান্না
যে যমীনে সে ইবাদত করত এবং যে দরজা দিয়ে তার আমল উপরে উঠত, তারা চল্লিশ দিন ধরে তার জন্য কাঁদতে থাকে।
-
ফেরেশতাদের অভ্যর্থনা
পাঁচশত ফেরেশতা তার গোসল ও কাফন-দাফনে শরীক হয়। তার বাড়ির দরজা থেকে কবর পর্যন্ত দুই সারিতে দাঁড়িয়ে তার জন্য মাগফিরাতের দু'আ করতে থাকে।
-
ঊর্ধ্বাকাশে আরোহণ
মৃত্যুর ফেরেশতা রূহ নিয়ে আরোহণের সময় জিবরীল (আঃ) সত্তর হাজার ফেরেশতাসহ তাকে অভ্যর্থনা জানান এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে সুসংবাদ দেন।
-
কবরে নেক আমলের সুরক্ষা
কবরে আজাব আসতে চাইলে ডান দিক থেকে সালাত, বাম দিক থেকে সাওম, মাথার দিক থেকে কুরআন এবং পায়ের দিক থেকে নামাজের জন্য পদচালনা—প্রতিটি নেক আমল তাকে ঢালের মতো রক্ষা করে।
-
মুনকার-নাকীরের আগমন ও জিজ্ঞাসাবাদ
বিদ্যুৎ চমকের মতো চোখ ও বজ্রের মতো কণ্ঠস্বরবিশিষ্ট দুজন ফেরেশতা আসেন এবং তাকে বসিয়ে প্রশ্ন করেন: "তোমার প্রতিপালক কে? তোমার দ্বীন কী? তোমার নবী কে?"
সাহাবায়ে কিরাম এই ভয়ঙ্কর বর্ণনা শুনে জিজ্ঞাসা করলেন, "ইয়া রাসূলুল্লাহ! এমন অবস্থায় কে কথা বলতে সক্ষম হবে?" তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এই আয়াত পাঠ করলেন:
يُثَبِّتُ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ بِٱلْقَوْلِ ٱلثَّابِتِ فِى ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا وَفِى ٱلْـَٔاخِرَةِ
"আল্লাহ মুমিনদেরকে সুদৃঢ় বাক্য দ্বারা দুনিয়ার জীবনে ও আখিরাতে প্রতিষ্ঠিত রাখেন।" (সূরা ইবরাহীম, আয়াত ২৭)
ঈমানের পুরস্কার
-
অটল উত্তর
আল্লাহর সাহায্যে মু'মিন ব্যক্তি দৃঢ়তার সাথে উত্তর দেয়: "আমার প্রতিপালক একমাত্র আল্লাহ, আমার দ্বীন ইসলাম এবং আমার নবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)।"
-
কবরের প্রশস্ততা
ফেরেশতারা বলেন, "তুমি সত্য বলেছ।" অতঃপর তার কবরকে চতুর্দিকে বহু দূর পর্যন্ত প্রশস্ত করে দেওয়া হয়।
-
জান্নাতের দরজা উন্মোচন
তার জন্য জান্নাতের দিকে একটি দরজা খুলে দেওয়া হয় এবং বলা হয়, "ইহাই তোমার চিরস্থায়ী বাসস্থান।" সে তখন এমন আনন্দ লাভ করে, যা চিরদিন তার অন্তরে বিদ্যমান থাকে।