
ইসলামে "ইহসান" একটি গভীর ও সুন্দর ধারণা, যা প্রায়ই "উৎকর্ষ" বা "আধ্যাত্মিক সৌন্দর্য" হিসেবে অনুবাদ করা হয়। এটি শুধু ইবাদতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর প্রতি গভীর সচেতনতা নিয়ে কাজ করাকে বোঝায়। বিখ্যাত 'হাদিসে জিবরীল'-এ এর সর্বোত্তম সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
ইহসানের সংজ্ঞা
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে যখন জিজ্ঞাসা করা হলো, "ইহসান কী?" তিনি উত্তর দিলেন, "ইহসান হলো এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করা, যেন তুমি তাঁকে দেখছ। আর যদি তুমি তাঁকে দেখতে না-ও পাও, (তবে এই অনুভূতি রাখা যে) তিনি তোমাকে দেখছেন।"
— সহিহ বুখারী ও মুসলিমইহসানের দুটি স্তর
এই হাদিস থেকে আমরা ইহসানের দুটি স্তর পাই:
- সর্বোচ্চ স্তর: এমনভাবে ইবাদত করা, যেন আপনি আল্লাহকে নিজের সামনে দেখছেন। এটি আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা, ভয় ও শ্রদ্ধার সর্বোচ্চ পর্যায়।
- ন্যূনতম স্তর: এই বিশ্বাস ও অনুভূতি নিয়ে ইবাদত করা যে, আমি যদিও আল্লাহকে দেখছি না, কিন্তু তিনি অবশ্যই আমাকে দেখছেন। এই সচেতনতা মানুষকে সব ধরনের গোপনীয় ও প্রকাশ্য পাপ থেকে বিরত রাখে এবং প্রতিটি কাজ সুন্দরভাবে করতে অনুপ্রাণিত করে। ol>
-
কর্মক্ষেত্রে: নিজের দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করা, এই ভেবে যে আল্লাহ আমার কাজের সাক্ষী।
-
পরিবারে: পিতা-মাতা, স্ত্রী-সন্তানদের সাথে সর্বোত্তম ও সুন্দর আচরণ করা।
-
কথাবার্তায়: সত্য কথা বলা, পরনিন্দা থেকে বিরত থাকা এবং সুন্দর ও নম্র ভাষায় কথা বলা।
-
সৃষ্টির প্রতি: পশুপাখি ও পরিবেশের যত্ন নেওয়া, কারণ আল্লাহ সবকিছুরই সৃষ্টিকর্তা এবং তিনি তাঁর সৃষ্টির প্রতি দয়াকে ভালোবাসেন।
দৈনন্দিন জীবনে ইহসানের প্রয়োগ
ইহসান শুধু নামাজ-রোজার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি আমাদের প্রতিটি কাজে उत्कृष्टता আনার অনুপ্রেরণা দেয়:
সংক্ষেপে, ইহসান হলো জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর স্মরণে থেকে নিজের সেরাটা দেওয়া। এটিই একজন মুসলিমকে সাধারণ স্তর থেকে অসাধারণের স্তরে উন্নীত করে।